OrdinaryITPostAd

হিসাবচক্র || Accounting Cycle

 

হিসাবচক্রঃ

দূতরফা দাখিলা পদ্ধতি অনুযায়ী প্রতিটি ব্যাবসায় প্রতিষ্ঠানের একটি নির্দিষ্ট হিসাব কাল থাকে। কোন একটি হিসাব কালের শেষ দিনের সম্পদ, দায় ও মালিকানা স্বত্ব হিসাবের উদ্বৃত্ত দিয়ে পরবর্তী বছরের হিসাব কাল শুরু হয়। নতুন বছরেও ঐ একই কার্যক্রম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চক্রাকারে চলতে থাকে। এভাবে যে ক্রম বা ধারাবাহিকতায় হিসাববিজ্ঞান প্রক্রিয়ার কার্যক্রম সম্পাদিত হয় তাকেই হিসাব চক্র বলে।

দূতরফা দাখিলা পদ্ধতিতে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সংঘটিত লেনদেনগুলোকে শ্রেণীবিন্যাস করে প্রথমে জাবেদা, জাবেদা হতে খতিয়ানে, খতিয়ানের উদ্বৃত্ত নিয়ে গাণিতিক শুদ্ধতা যাচাই করার জন্য রেওয়ামিল প্রস্তুত, রেওয়ামিল হতে আয় বিবরণী ও আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত করা হয়। পরবর্তীতে আর্থিক বিশ্লেষণের কাজ সম্পন্ন করা হয়। এভাবেই বিগত বছরের সমাপনী জের (উদ্বৃত্ত) নিয়ে পরবর্তী বছরের প্রারম্ভিক কার্যক্রম শুরু হয় এবং হিসাবের যাবতীয় কার্যক্রম ধাপে ধাপে বা পর্যায়ক্রমে সম্পন্ন হয়।

হিসাব চক্রের উদাহরণঃ

মিঃ ফয়সাল ১ জানু ২০২০ সালে ২০,০০০ টাকা নিয়ে ব্যবসা আরম্ভ করেন। ৩১ শে ডিসেম্বর ২০২০ সালে তার মুনাফা বা লাভ হলো ৪,০০০ টাকা। ৩১ শে ডিসেম্বর ২০২০ সালে তার মোট মূলধনের পরিমাণ হবে (২০,০০০ + ৪,০০০) বা ২৪,০০০ টাকা। এখন প্রশ্ন হলো, ১ জানু ২০২১ সালে তার মূলধন কত?
উত্তরে বলা যায়, ৩১ শে ডিসেম্বর ২০২০ সালের ২৪,০০০ টাকাই হবে ২০২১ সালে তার প্রারম্ভিক মূলধন। অর্থাৎ বিগত বছরের সমাপনী মূলধন নতুন বছরের প্রারম্ভিক মূলধন হিসাবে গণ্য হবে।

হিসাব চক্রের ধাপসমূহঃ

আধুনিক হিসাববিজ্ঞানীদের মতে যে কয়টি ধাপ চক্রাকারে আবর্তিত হয় তা নিচে ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করা হলো।

১। লেনদেন চিহ্নিতকরণ (Identification of Transaction):
ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সংঘটিত লেনদেনসমূহ সর্বপ্রথম চিহ্নিত করতে হবে।

২। বিবরণী ছকে বা হিসাব সমীকরণে লেনদেন বিশ্লেষণ (Analysis of Transaction):
এই ধাপে সংঘটিত লেনদেনগুলোর হিসাবখাত চিহ্নিত করতে হবে।

৩। জাবেদা দাখিলা বা লেনদেন লিপিবদ্ধকরণ (Recording of Transaction):
এই ধাপে দু'তরফা দাখিলা পদ্ধতি মোতাবেক ডেবিট এবং ক্রেডিট নির্ণয় করে নির্দিষ্ট ছকে লিপিবদ্ধ করতে হবে।

৪। খতিয়ান বা শ্রেণীবিন্যাসকরণ (Classification of Transaction):
সমজাতীয় লেনদেনগুলো একটি নির্দিষ্ট শিরোনামে সংক্ষিপ্ত আকারে হিসাবের পাকা বইতে স্থানান্তর করা হয়।
৫। রেওয়ামিল বা সংক্ষিপ্তকরণ (Summarization of Transaction):
এই ধাপে খতিয়ানের উদ্বৃত্ত দ্বারা গাণিতিক শুদ্ধতা যাচাইয়ের জন্য রেওয়ামিল প্রস্তুত করা হয়। ফলে রেওয়ামিলের উভয় পার্শ্বের যোগফল সমান হবে।

৬। সমন্বয় জাবেদা (Adjusting Entries):
সঠিক আর্থিক অবস্থা নিরূপণের জন্য বকেয়া ও অগ্রিম আয় এবং ব্যয়ের জন্য বা অলিখিত বা ভুলত্রুটির জন্য সমন্বয় দাখিলা দেওয়া হয়।

৭। সমন্বিত রেওয়ামিল (Adjusting Trial Balance):
এই ধাপে সমন্বয় দাখিলা দেওয়ার পরে সমন্বিত উদ্বৃত্ত নিয়ে সমন্বিত রেওয়ামিল প্রস্তুত করা হয়।

৮। কার্যপত্র (Worksheet):
এটি একটি ঐচ্ছিক ধাপ। ছোট ছোট ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে কার্যপত্রের প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু বড় বড় প্রতিষ্ঠানসমূহ আর্থিক বিবরণী প্রস্তুতের পূর্বে কার্যপত্র তৈরি করে থাকে।

৯। আর্থিক বিবরণী প্রস্তুতকরণ (Preparation of Financial Statement):
এটি হিসাব চক্রের মূল ধাপ। হিসাব তথ্যের ব্যবহারকারীদের জন্য হিসাব কাল শেষে আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত করা হয়।

১০। সমাপনী দাখিলা (Closing Entries):
আর্থিক বিবরণী প্রস্তুতের পরে মুনাফাজাতীয় হিসাবসমূহ বন্ধ করার জন্য সমাপনী দাখিলা দিতে হয়।

১১। সমাপনী উত্তর রেওয়ামিল (Post Closing Trial Balance):
সমাপনী দাখিলার মাধ্যমে মুনাফা জাতীয় হিসাব সমুহ বন্ধ হয়ে যায় এবং অবশিষ্ট হিসাবগুলো নিয়ে সমাপনী উত্তর রেওয়ামিল প্রস্তুত করতে হয়।

১২। বিপরীত দাখিলা (Reversal Entries):
বিপরীত দাখিলা হিসাব চক্রের ঐচ্ছিক ও শেষ ধাপ। বকেয়া ও অগ্রিম আয় ও ব্যয় সংক্রান্ত সমন্বয় দাখিলার (Adjusting Entries) বিপরীত দাখিলা হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪